
সাইফুল ইসলাম, মান্দা,নওগাঁ
নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেছেন নওগাঁ জেলা ইতি মধ্যেই আমের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে দেশ ও বিদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। নওগাঁ জেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে উৎপাদিত সুস্বাদু আম্রপালিসহ অন্যান্য আমের সুনাম দেশের গোন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এটি শুধু নওগাঁর নয় পুরো বাংলাদেশের গর্ব। আমকে নওগাঁর ব্র্যান্ডিং হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। প্রতি বছরই নওগাঁতে আমের বাগানের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার হিসেবে ইতি মধ্যেই সাপাহার উপজেলার আম বাজারের নাম দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সুনাম ধরে রাখতে পরিচ্ছন্ন কাঠামোর মধ্যে আম বাজারজাত করার কোন বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, সাময়িক লাভকে বড় করে না দেখে আমকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের গৃহিত দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলে উৎপাদিত আমের যৌবন বহুবছর টিকে থাকবে। সাপাহার উপজেলার মান অক্ষুন্ন রেখে আসন্ন মৌসুমে প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক আম বাজারজাত করার আহব্বান জানান তিনি। যদি কেউ আম বাজার জাত করণে কোন অরাজকতা করেন কিংবা করার চেস্টা করেন তাহলে তা বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি আসন্ন আমের মৌসুমে সাপাহার উপজেলার উৎপাদিত আম বাজার জাত করণ সংক্রান্ত বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এই কথাগুলো বলেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে সাপাহার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় আমের ওজন নির্ধারণ, আড়ৎদারী, যানজট নিরসন, বাজার পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধানে এবং সাপাহারে উৎপাদিত আম বাজার জাত করণ সংক্রান্ত বিষয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ, আমচাষী কল্যাণ সমিতি ও আড়ৎদার সমিতির নেতৃবন্দ, থানা পুলিশ, ছাত্র প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সকল ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ, পরিবহন শ্রমিক সভাপতি, কুরিয়ার সার্ভিসের এজেন্ট, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি বছর জেলার ১১টি উপজেলায় ৩০ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে আম্রপালিসহ
বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাপাহার উপজেলায় বেশি জমিতে আম বাগান রয়েছে। প্রতি বছরই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমের বাগান সম্প্রসারিত হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সময় মতো জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে আম নামানোর নির্ধারিত সময়ের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হবে। যদি এবার বড় ধরণের প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় হানা না দেয় তাহলে চলতি বছর আমের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ হবে। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরও বাগানীরা আম চাষে লাভবান হবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।