বাগেরহাটে দড়াটানা নদী থেকে কৃষকের লাশ উদ্ধার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • ৭ Time View

মো:মিজানুর রহমান সাগর

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট সদর উপজেলার অর্জুনবাহার এলাকার দড়াটানা নদীর পাড় থেকে আজমির শেখ (৪৭) নামে এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) সকাল সাড়ে আটটার দিকে স্থানীয়রা নদীর পাড়ে আজমির শেখের লাশ দেখে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহত আজমির শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের হাসেম শেখ এর ছেলে।

নিহত আজমির শেখের শরীরের বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন ও কান থেকে রক্ত বের হবার চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাথারি ভাবে মারধর করে নদীতে ফেলে দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার আজমির শেখ বড় বাঁশবাড়িয়া এলাকার স্থানীয় আশিকের মাছের ঘেরের বাসায় বসে তাস খেলছিল। এক পর্যায়ে পুলিশ ও স্থানীয় কিছু লোকজন আসলে তারা গা ঢাকা দেয়। এ সময় পুলিশ পাশ^বর্তী মধু শরীফকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী আরো জানান,  মূলত মধু শরীফের ভাই খোরশেদ শরীফকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসছিল সন্ত্রাসীরা। কিন্তু ভুলক্রমে আজমীর শরীফকে অতর্কিতভাবে হামলা করে তাকে নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান এলাকাবাসী।

নিহত আজমির শেখের ছেলে ওমর ফারুক বলেন, আমার পিতা কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল না, কারো সাথে কোন শত্রæতা ও ছিল না। আমরা দুই ভাই ঢাকায় চাকরি করি মা প্রবাসী। মঙ্গলবার বাঁশবাড়ি এলাকায় তাস খেলতে আসছিল আমার পিতা। কিন্তু সন্ত্রাসীরা কি কারণে আমার পিতাকে হত্যা করেছে তার সঠিক কারণ জানতে পারছি না। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে পিতা হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে খোরশেদ শরীফের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ আমাদের বাড়িতে আসে। আমার দেবর প্রতিবন্দী মধু শরীফকে আটক করে। এ সময় স্থানীয় কামরুল, ইদ্রিস তালুকদার, রুবেল, জাহিদ, সগীর, মারুফসহ ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল। সন্ত্রাসীরা আমার পেটের উপর লাথি মারে ও হুমকি দিয়ে বলে তোর স্বামীকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছি।

মধু শরীফ ও খোরশেদ শরীফের মা হালিমা বেগম বলেন, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে মধু শরীফকে পুলিশ বিনা কারণে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। আবার ছেলে খোরশেদ শরীফকে তারা হত্যা করতে চেয়েছিল কিন্তু আজমির শেখকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে। তিনি তার ছেলেদের জীবনের নিরাপত্তা ও হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান বলেন, ৯৯৯  এ ফোন পেয়ে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ নমুনা সংগ্রহ করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে । প্রাথমিকভাবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে। পরবর্তী আইনগত অবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মহাদেবপুরে নকল ও ভেজাল কৃষি উপকরণের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ে সচেতনতামূলক সভা

বাগেরহাটে দড়াটানা নদী থেকে কৃষকের লাশ উদ্ধার

Update Time : ০৩:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

মো:মিজানুর রহমান সাগর

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট সদর উপজেলার অর্জুনবাহার এলাকার দড়াটানা নদীর পাড় থেকে আজমির শেখ (৪৭) নামে এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) সকাল সাড়ে আটটার দিকে স্থানীয়রা নদীর পাড়ে আজমির শেখের লাশ দেখে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহত আজমির শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের হাসেম শেখ এর ছেলে।

নিহত আজমির শেখের শরীরের বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন ও কান থেকে রক্ত বের হবার চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাথারি ভাবে মারধর করে নদীতে ফেলে দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার আজমির শেখ বড় বাঁশবাড়িয়া এলাকার স্থানীয় আশিকের মাছের ঘেরের বাসায় বসে তাস খেলছিল। এক পর্যায়ে পুলিশ ও স্থানীয় কিছু লোকজন আসলে তারা গা ঢাকা দেয়। এ সময় পুলিশ পাশ^বর্তী মধু শরীফকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী আরো জানান,  মূলত মধু শরীফের ভাই খোরশেদ শরীফকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসছিল সন্ত্রাসীরা। কিন্তু ভুলক্রমে আজমীর শরীফকে অতর্কিতভাবে হামলা করে তাকে নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান এলাকাবাসী।

নিহত আজমির শেখের ছেলে ওমর ফারুক বলেন, আমার পিতা কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল না, কারো সাথে কোন শত্রæতা ও ছিল না। আমরা দুই ভাই ঢাকায় চাকরি করি মা প্রবাসী। মঙ্গলবার বাঁশবাড়ি এলাকায় তাস খেলতে আসছিল আমার পিতা। কিন্তু সন্ত্রাসীরা কি কারণে আমার পিতাকে হত্যা করেছে তার সঠিক কারণ জানতে পারছি না। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে পিতা হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে খোরশেদ শরীফের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ আমাদের বাড়িতে আসে। আমার দেবর প্রতিবন্দী মধু শরীফকে আটক করে। এ সময় স্থানীয় কামরুল, ইদ্রিস তালুকদার, রুবেল, জাহিদ, সগীর, মারুফসহ ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল। সন্ত্রাসীরা আমার পেটের উপর লাথি মারে ও হুমকি দিয়ে বলে তোর স্বামীকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছি।

মধু শরীফ ও খোরশেদ শরীফের মা হালিমা বেগম বলেন, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে মধু শরীফকে পুলিশ বিনা কারণে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। আবার ছেলে খোরশেদ শরীফকে তারা হত্যা করতে চেয়েছিল কিন্তু আজমির শেখকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে। তিনি তার ছেলেদের জীবনের নিরাপত্তা ও হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান বলেন, ৯৯৯  এ ফোন পেয়ে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ নমুনা সংগ্রহ করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে । প্রাথমিকভাবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে। পরবর্তী আইনগত অবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।