বিদ্যালয়ে ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার এক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী একটি বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। ওই প্রার্থী শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের তাঁর পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলতে বলেন। অভিযোগ উঠেছে ওই সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন।

গত শনিবার উপজেলার ধূলসুড়া ইউনিয়নের এমপিওভুক্ত ইব্রাহিমপুর ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

শ্রেণিকক্ষে ভোট চেয়ে শিক্ষার্থীদের হাত প্রার্থীর লিফলেট দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোট চাওয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (পালকি প্রতীক) শেখ কাওছার উদ্দীন। তাঁর ভাই শেখ ফারুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি।

https://manobadhikarkantha.com/archives/246

আজ সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির কক্ষে ঘুরে ঘুরে ভোট চান শেখ কাওছার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন।

ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী জানায়, পালকি প্রতীকের প্রার্থী শেখ কাওছারের পক্ষে ভোট চেয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় তাদের হাতে লিফলেট দিয়ে বলা হয়, বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের যেন বলা হয় পালকি মার্কায় ভোট দিতে। এ সময় মো. আরিফুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. মিলন মিয়া ও মো. মারুফ হোসেন নামের চার শিক্ষক পাঠদান করছিলেন। পাঠদান থামিয়ে ওই প্রার্থী ভোটের প্রচারণা চালান।

আজ বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলন মিয়া ও মো. মারুফ হোসেনের কাছে গত শনিবারের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ভোট চাইনি। পালকি প্রতীকের প্রার্থী ক্লাসরুমে গেলে, কে এসেছেন, দেখতে ক্লাসরুমে গিয়েছি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে কেউ হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ করছে।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতির ভাই প্রার্থী হয়েছেন বলেই ভোট চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘না, আমি ভোট চাইনি।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিগার সুলতানা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ভোট চাওয়ার সুযোগ নেই। নিয়মবহির্ভূত কাজ। যদি তিনি ভোট চেয়ে থাকেন, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিদ্যালয়ে প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাফিজা খাতুন মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনার কাছ থেকেই বিষয়টা জানলাম। আমি খোঁজ নিচ্ছি। তবে কোনো প্রার্থী ক্লাসরুমে গিয়ে প্রচারণা চালাতে পারেন না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

চিতলমারীতে দুইপক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা জিয়া মঞ্চের সভাপতি নিহত, আটক ৩

বিদ্যালয়ে ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী

Update Time : ০৫:৫১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার এক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী একটি বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। ওই প্রার্থী শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের তাঁর পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলতে বলেন। অভিযোগ উঠেছে ওই সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন।

গত শনিবার উপজেলার ধূলসুড়া ইউনিয়নের এমপিওভুক্ত ইব্রাহিমপুর ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

শ্রেণিকক্ষে ভোট চেয়ে শিক্ষার্থীদের হাত প্রার্থীর লিফলেট দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোট চাওয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (পালকি প্রতীক) শেখ কাওছার উদ্দীন। তাঁর ভাই শেখ ফারুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি।

https://manobadhikarkantha.com/archives/246

আজ সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির কক্ষে ঘুরে ঘুরে ভোট চান শেখ কাওছার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন।

ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী জানায়, পালকি প্রতীকের প্রার্থী শেখ কাওছারের পক্ষে ভোট চেয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় তাদের হাতে লিফলেট দিয়ে বলা হয়, বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের যেন বলা হয় পালকি মার্কায় ভোট দিতে। এ সময় মো. আরিফুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. মিলন মিয়া ও মো. মারুফ হোসেন নামের চার শিক্ষক পাঠদান করছিলেন। পাঠদান থামিয়ে ওই প্রার্থী ভোটের প্রচারণা চালান।

আজ বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলন মিয়া ও মো. মারুফ হোসেনের কাছে গত শনিবারের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ভোট চাইনি। পালকি প্রতীকের প্রার্থী ক্লাসরুমে গেলে, কে এসেছেন, দেখতে ক্লাসরুমে গিয়েছি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে কেউ হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ করছে।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতির ভাই প্রার্থী হয়েছেন বলেই ভোট চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘না, আমি ভোট চাইনি।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিগার সুলতানা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ভোট চাওয়ার সুযোগ নেই। নিয়মবহির্ভূত কাজ। যদি তিনি ভোট চেয়ে থাকেন, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিদ্যালয়ে প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাফিজা খাতুন মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনার কাছ থেকেই বিষয়টা জানলাম। আমি খোঁজ নিচ্ছি। তবে কোনো প্রার্থী ক্লাসরুমে গিয়ে প্রচারণা চালাতে পারেন না।’