ক্রেতার অভাবে গাছেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • ১১ Time View

মো:মিজানুর রহমান সাগর

বাগেরহাটের চিতলমারীতে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টমেটো দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে দরপতনে ক্ষেতের পাকা টমেটো নিয়ে চাষিরা এখন উদ্বিগ্ন। কারণ ক্ষেত থেকে তুলে টমেটো আড়ৎ (মোকাম) পর্যন্ত পৌঁছানোর কামলার মজুরি ও পরিবহন খরচ না উঠছেনা। বেশ কয়েকদিন ধরে দুই তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে রবিবার (২ মার্চ) সকালে দেখা যায় ১ টাকা দরেও কিনছেন না টমেটো এই কারনে কৃষকেরা টমেটো গাছ থেকে না তুলে গাছেই পাকিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে।

কৃষকরা জানান, বাজার দর এমন চলতে থাকলে এ বছর টমেটো চাষিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ন্যুঁয়ে পড়বে তাঁদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড।

চিতলমারী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ৭২ একর জমিতে হাইটম, বিউটিফুল-২, বিপুল প্লাস, মেজর, বাহুবলী ও বিউটিসহ বিভিন্ন জাতের টমেটোর চাষ করা হয়েছে। তাঁরা এ বছর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে টমেটো চাষ করেছেন। বিরূপ আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। প্রথম দিকে প্রতিমণ টমেটো ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে টমেটোর কোনো দাম না থাকায় কৃষকেরা টমেটো বাজারে তুলে আনছেন না। দিনমজুর দিয়ে টমেটো তুলে যে টাকা বিক্রি হয় তাতে কৃষকের খরচের টাকা ও উঠে না।

উপজেলার দড়িউমাজুড়ি (গিরিঙ্গির) মোড়ে আড়তে বিক্রি করতে আসা টমেটো চাষি অমাল রায় কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এ অঞ্চলের টমেটো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মেটায়। প্রতিবছর এখানে কয়েক লাখ টন টমেটো উৎপাদিত হয়। হঠাৎ টমোটের দরপতনে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। আমি এনজিও দিয়ে লোন তুলে এ বছর টমেটো চাষ করেছি আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে আগামীতে আমার চাষ করাই দায় হয়ে যাবে আমি এই ঋীনের বোঝা নিয়ে কি ভাবে কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

পাইকারী ক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রতি কেজি টমেটো দুই তিন টাকা দরে কিনেছি। দেশের যে সব অঞ্চলে চিতলমারীর টমেটোর চাহিদা ছিল, সেই সব এলাকায় এখন চাহিদা কম। তাছাড়া উৎপাদন অনেক বেশী। ফলে এই দরপতন। এছাড়া দাম কমের কারণে বাজারে পাইকারী ক্রেতাও কম।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সিফাত-আল-মারুফ জানান, এ বছর চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে কোল্ড স্টোর থাকলে চাষিরা টমেটো সংরক্ষণ করে পরে বেশী দামে বিক্রি করতে পারত। যেহেতু সে ব্যবস্থা নেই। তাই চাটনী, জুস উৎপাদন কোম্পানি গুলো এগিয়ে আসলে চাষিরা ভাল দাম পেত এবং লাভবান হতো।##

০৩/০৩/২০২৫

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জয়পুরহাটে চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় পঙ্গুত্ববরণ করা ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

ক্রেতার অভাবে গাছেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল

Update Time : ১২:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

মো:মিজানুর রহমান সাগর

বাগেরহাটের চিতলমারীতে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টমেটো দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে দরপতনে ক্ষেতের পাকা টমেটো নিয়ে চাষিরা এখন উদ্বিগ্ন। কারণ ক্ষেত থেকে তুলে টমেটো আড়ৎ (মোকাম) পর্যন্ত পৌঁছানোর কামলার মজুরি ও পরিবহন খরচ না উঠছেনা। বেশ কয়েকদিন ধরে দুই তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে রবিবার (২ মার্চ) সকালে দেখা যায় ১ টাকা দরেও কিনছেন না টমেটো এই কারনে কৃষকেরা টমেটো গাছ থেকে না তুলে গাছেই পাকিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে।

কৃষকরা জানান, বাজার দর এমন চলতে থাকলে এ বছর টমেটো চাষিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ন্যুঁয়ে পড়বে তাঁদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড।

চিতলমারী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ৭২ একর জমিতে হাইটম, বিউটিফুল-২, বিপুল প্লাস, মেজর, বাহুবলী ও বিউটিসহ বিভিন্ন জাতের টমেটোর চাষ করা হয়েছে। তাঁরা এ বছর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে টমেটো চাষ করেছেন। বিরূপ আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। প্রথম দিকে প্রতিমণ টমেটো ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে টমেটোর কোনো দাম না থাকায় কৃষকেরা টমেটো বাজারে তুলে আনছেন না। দিনমজুর দিয়ে টমেটো তুলে যে টাকা বিক্রি হয় তাতে কৃষকের খরচের টাকা ও উঠে না।

উপজেলার দড়িউমাজুড়ি (গিরিঙ্গির) মোড়ে আড়তে বিক্রি করতে আসা টমেটো চাষি অমাল রায় কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এ অঞ্চলের টমেটো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মেটায়। প্রতিবছর এখানে কয়েক লাখ টন টমেটো উৎপাদিত হয়। হঠাৎ টমোটের দরপতনে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। আমি এনজিও দিয়ে লোন তুলে এ বছর টমেটো চাষ করেছি আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে আগামীতে আমার চাষ করাই দায় হয়ে যাবে আমি এই ঋীনের বোঝা নিয়ে কি ভাবে কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

পাইকারী ক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রতি কেজি টমেটো দুই তিন টাকা দরে কিনেছি। দেশের যে সব অঞ্চলে চিতলমারীর টমেটোর চাহিদা ছিল, সেই সব এলাকায় এখন চাহিদা কম। তাছাড়া উৎপাদন অনেক বেশী। ফলে এই দরপতন। এছাড়া দাম কমের কারণে বাজারে পাইকারী ক্রেতাও কম।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সিফাত-আল-মারুফ জানান, এ বছর চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে কোল্ড স্টোর থাকলে চাষিরা টমেটো সংরক্ষণ করে পরে বেশী দামে বিক্রি করতে পারত। যেহেতু সে ব্যবস্থা নেই। তাই চাটনী, জুস উৎপাদন কোম্পানি গুলো এগিয়ে আসলে চাষিরা ভাল দাম পেত এবং লাভবান হতো।##

০৩/০৩/২০২৫