নওগাঁয় হত্যা মামলায় এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ রায় দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৩৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭ Time View

সাইফুল ইসলাম, মান্দা,নওগাঁ :

নওগাঁয় মামাকে হত্যা করায় মোঃ বাবুল রহমান নামে এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ রায় দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। বুধবার ৯ এপ্রিল দুপুরে তার উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন জেলা দায়রা জজ মোঃ রোকনুজ্জামান। মামলাটি রাস্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মোঃ রফিকুল আলম ও আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মোঃ আব্দুল লতিফ।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাবুল রহমান নওগাঁ জেলার সাপাহার থানাধীন খেড়ন্দা গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, বাবলু রহমান পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে তার বাবা-মাকে মারপিটসহ শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন। ঐ ঘটনায় তার মা হালিমা খাতুন গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে শিরন্টি ইউনিয়ন পরিষদে ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর বার বার নোটিশ করেও সে ইউনিয়ন পরিষদের শালিসে উপস্থিত না হওয়ায় ও তার অত্যাচার মা সহ্য করতে না পেরে শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং তাকে শাসন করার জন্য গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে তার ভাই ফয়েজ উদ্দিনকে তার বাড়ীতে আসতে বলেন। এরপর তার বাবাসহ তার ফুফাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই আসাদুল ইসলামকে নিয়ে গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে বিকাল অনুমান ৪ টায় তার ফুপুর বাড়ীতে যায়। এসময় বাদীর ফুফু-ফুফা (আসামীর পিতা-মাতা) এবং অন্যরা আপোষ মিমাংসার আলোচনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সে উত্তেজিত হয়ে তার শয়ন ঘর হতে একটি লোহার রড নিয়ে এসে ফয়েজ উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে সাক্ষীদের সামনে রড দিয়ে মাথায় স্ব-জোরে আঘাত করে। সেই আঘাতের ফলে বাদীর বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় তারা ভিকটিমকে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ভিকটিমের অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে গত ২৫ মে সন্ধ্যা সোয়া ৬ সময় সময় রাজশাহীর সিডিএম হসপিটালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ মে রাত সারে ১২ টার সময় সে মৃত্যু বরণ করেন।
এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মোঃ রফিকুল আলম বলেন, আসামীর বিরুদ্ধে পেনাল কোর্ট এর ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় উল্লেখিত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সহ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে আসামী পক্ষের আইনজীবী মোঃ আব্দুল লতিফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় তার কোন মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ভিয়েনা রাজ্য নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হলেন লালমোহনের সন্তান মাহমুদুর রহমান নয়ন

নওগাঁয় হত্যা মামলায় এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ রায় দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত

Update Time : ১১:৩৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

সাইফুল ইসলাম, মান্দা,নওগাঁ :

নওগাঁয় মামাকে হত্যা করায় মোঃ বাবুল রহমান নামে এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ রায় দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। বুধবার ৯ এপ্রিল দুপুরে তার উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন জেলা দায়রা জজ মোঃ রোকনুজ্জামান। মামলাটি রাস্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মোঃ রফিকুল আলম ও আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মোঃ আব্দুল লতিফ।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাবুল রহমান নওগাঁ জেলার সাপাহার থানাধীন খেড়ন্দা গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, বাবলু রহমান পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে তার বাবা-মাকে মারপিটসহ শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন। ঐ ঘটনায় তার মা হালিমা খাতুন গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে শিরন্টি ইউনিয়ন পরিষদে ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর বার বার নোটিশ করেও সে ইউনিয়ন পরিষদের শালিসে উপস্থিত না হওয়ায় ও তার অত্যাচার মা সহ্য করতে না পেরে শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং তাকে শাসন করার জন্য গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে তার ভাই ফয়েজ উদ্দিনকে তার বাড়ীতে আসতে বলেন। এরপর তার বাবাসহ তার ফুফাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই আসাদুল ইসলামকে নিয়ে গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে বিকাল অনুমান ৪ টায় তার ফুপুর বাড়ীতে যায়। এসময় বাদীর ফুফু-ফুফা (আসামীর পিতা-মাতা) এবং অন্যরা আপোষ মিমাংসার আলোচনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সে উত্তেজিত হয়ে তার শয়ন ঘর হতে একটি লোহার রড নিয়ে এসে ফয়েজ উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে সাক্ষীদের সামনে রড দিয়ে মাথায় স্ব-জোরে আঘাত করে। সেই আঘাতের ফলে বাদীর বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় তারা ভিকটিমকে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ভিকটিমের অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে গত ২৫ মে সন্ধ্যা সোয়া ৬ সময় সময় রাজশাহীর সিডিএম হসপিটালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ মে রাত সারে ১২ টার সময় সে মৃত্যু বরণ করেন।
এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মোঃ রফিকুল আলম বলেন, আসামীর বিরুদ্ধে পেনাল কোর্ট এর ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় উল্লেখিত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সহ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে আসামী পক্ষের আইনজীবী মোঃ আব্দুল লতিফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় তার কোন মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।